অর্জুন গাছের ভেষজ গুণ

অর্জুন

ভেষজশাস্ত্রে ওষধি গাছ হিসাবে অর্জুনের ব্যবহার বলা হয়েছে। এই উদ্ভিদ কমব্রিটেসি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘টারমিনালিয়া অরজুনা’, সংস্কৃত নাম ককুভ। বৃহদাকৃতির বহুবর্ষজীবী এই উদ্ভিদটি প্রায় ১৮-২৫ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট হয়ে থাকে। গাছটির মাথা ছড়ানো ডালগুলো নীচের দিকে ঝুলোনো থাকে। পাতা দেখতে অনেকটা মানুষের জিহ্বাকৃতির। ছাল খুব মোটা এবং ধূসর বর্ণের। গাছ থেকে সহজেই ছাল ওঠানো যায়। ফল দেখতে কামরাঙার মতো, পাঁচ খাঁজ বিশিষ্ট কিন্তু আকৃতিতে অনেক ছোট।

ভেষজ গুণ


বুক ধড়ফড় করলে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনো হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মিলি জলের সাথে মিশিয়ে জাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়। তবে পেটে যাতে বায়ু না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। অর্জুন ছাল বেটে খেলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী হয় কার্যক্ষমতা বাড়ে। এটি রক্তের কোলেস্টরল কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। বিচুর্ণ ফল মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং লিভারসিরোসিসের টনিক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অর্জুনের ছালে ট্যানিন রয়েছে, এ টানিন মুখ, জিহ্বা ও মাড়ির প্রদাহের চিকিৎসায় ব্যাবহার হয়। এটি মাড়ির রক্তপাত বন্ধ করে এবং শরীরে ক্ষত, খোস পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছাল বেঁটে লাগালে সেরে যায়। অর্জুনের ছাল হাঁপানি, আমাশয়, ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, ব্যথা, প্রদর ইত্যাদি চিকিৎসায়ও উপকারী। এ ছাড়া অর্জুনে স্যাপোনিন রয়েছে, এটি যৌন উদ্দীপনা বাড়ায়। অর্জুনের ছালের রস যৌন উদ্দীপনা বাড়াতেও ব্যবহার হয়। অর্জুন গাছের তেল খাদ্য হজম ক্ষমতা বাড়ায়। খাদ্যতন্ত্রের ক্রিয়া স্বভাবিক রাখতে সাহায্য করে। ক্যানসার কোষের বর্ধন রোধকারী গ্যালিক অ্যাসিড, ইথিগ্যালি, লিউটেনোলিন রয়েছে অর্জুন ছালে। এ কারণে এটি ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

Comments

Popular posts from this blog

Benefits of Akanda tree - আকন্দ গাছের উপকারিতা

Arjun tree benefits in Bengali - অর্জুন গাছের উপকারিতা

রাত পোহালেই সরস্বতী পূজা! জেনেনিন অঞ্জলি দেওয়ার সঠিক সময় সূচি…