নিম পাতার ঔষধি গুণ

নিম পাতার ঔষধি গুণ


nim এর ছবির ফলাফল
নিম গাছ আমাদের দেশে একটি অতি পরিচিত বৃক্ষ। গ্রামে নিম গাছ বেশি দেখা যায়। নিম গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Azadirachta Indica আর্য়োবেদিক  ঔষধি গাছ হিসেবে অত্যান্ত জনপ্রিয়। নিম একটি বহু বর্ষজীবী ও চির হরিত বৃক্ষ। বাংলাদেশের সবত্রই জন্মে তবে উত্তরাঞ্চলে বেশি দেখা যায়। নিম গাছের ডাল, পাতা, রস, ফুল, ফল, তেল, বাকল, শিকড় সবই কাজে লাগে। জেনে নেই নিমপাতার অসাধারণ গুনাগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে।
এইডস: নিম গাছের বাকল হতে আহরিত রস এইডস ভাইরাসকে মারতে সক্ষম। নিম পাতার রস অথবা পুরু পাতা অথবা নিম পাতার চা পান করলে এইডস রোগের কোনো ঝুঁকি থাকে না।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ: নিম পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই জন্ম নিয়ন্ত্রণের ঘটক (Agent) হিসেবে কাজ করে। সহবাসের পূর্বে নিম তেল তুলায় ভিজিয়ে স্ত্রী যৌন অঙ্গে ১৫ মিনিট রাখলে স্পার্ম মারা যায়। নিম লিফ টেবলেট পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন এক মুঠো নিম পাতা খেলে গর্ভধারণ হয় না। ৬ সপ্তাহ পুরুষ নিম তেল সেবনে স্ত্রী গর্ভবতী হয় না। সুতরাং যেসব নারীপুরুষ সন্তান নিতে দেরী করতে চাই তাদের জন্য খুবই উপকারি।
জন্ডিস: ২৫-৩০ ফোঁটা নিম পাতার রস একটু মধুর সঙ্গে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে জন্ডিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বহুমূত্র: প্রতিদিন ১ টেবিল চামচ নিম পতার রস সকালে খালি পেটে ৩ মাস খেলে ডায়বেটিস ভাল হয়। অন্য ভাবেও খেতে পারেন-প্রতিদিন সকালে ১০টি নিম পাতা গুড়া বা চিবিয়ে সেবন করলেও ডায়বেটিস
চোখের ব্যথা: চোখে চুলকানি হলে নিমপাতা পানিতে দশ মিনিট সিদ্ধ করে ঠাণ্ডা করে নিয়ে। চোখে সেই পানির ঝাপটা দিতে হবে। এতে আরামবোধ করবেন। নিম পাতা সামান্য শুস্ক আদা ও সৈন্ধব লবণ একত্রে পেস্ট করে সামান্য গরম করে একটি পরিস্কার পাতলা কাপড়ে লাগিয়ে তা দ্বারা চোখ ঢেকে দিলে চোখের যন্তনা ও ব্যথা সেরে যায়।
উকুন: মেয়েদের উকুন মাথায় হয়ে থাকে। আর উকুন হলে অনেক ক্ষেত্রে মাথায় বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই উকুন নিরাময় খুব দরকার। এইক্ষেত্রে নিমের ফুল বেটে মাথায় মাখলে উকুন মরে যায়।
কৃমি: ৩-৪গ্রাম নিম ছাল চূর্ণ সামান্য পরিমাণ সৈন্ধব লবণসহ সকালে খালি পেটে সেবন করে গেলে কৃমির উপদ্রব হতে রক্ষা পাওয়া যায়। নিয়মিত এক সপ্তাহ সেবন করে যেতে হব। কৃমি নিরাময় করতে নিমের গুনাগুণ অপরিসীম। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ১-২ গ্রাম মাত্রায় সেব্য।
রক্ত ও চর্ম: নিমপাতার রস রক্ত পরিষ্কার করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্তচলাচল বাড়িয়ে হৃৎপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও নিমের জুড়ি নেই। কাঁচা নিম পাতা ১০ গ্রাম ২ কাপ পানিতে জ্বাল করে ১ (এক) কাপ অবশিষ্ট থাকতে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মতো চিনি মিশিযে পান করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্তনে থাকবে। উল্লেখিত নিয়মে প্রতিদিন ২-৩ বার, নিয়মিত ১-২ মাস পান করে যেতে হবে।
ব্রণ: নিমপাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলেই নিমপাতা থেঁতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত। নিম পাতা পেষ্ট করে মধুর সাথে মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ব্রণ সেরে যায়।
ভারতীয় উপমহাদেশে  রোগ নিরাময়ে নিম পাতা ব্যবহৃত হয়। নিমপাতার রস ভাইরাস নির্মূল করে। আগে চিকেন পক্স, হাম ও অন্য চর্মরোগ হলে নিমপাতা বাটা লাগানো হতো। কাঁচা হলুদের সাথে নিম পাতা বেটে বসন্তের গুটিতে দিলে গুটি দ্রুত শুকিয়ে যায়। এছাড়াও নিমপাতা পানিতে সিদ্ধ করে সে পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের জ্বালাপোড়া ও চুলকানি দূর হয়। গর্ভাবস্থায় যে কোন ঔষুধের ব্যাপারে  সাবধানতা অবলম্বন করবেন।

Comments

Popular posts from this blog

Benefits of Akanda tree - আকন্দ গাছের উপকারিতা

Arjun tree benefits in Bengali - অর্জুন গাছের উপকারিতা

Bengali G.K